বঞ্চিতদের পদোন্নতিদেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
পদোন্নতি 'বঞ্চিত' অনেক যুগ্ম সচিবকে অতিরিক্ত সচিব করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফলে নিয়মিত ১৩তম ব্যাচের অনেক কর্মকর্তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৯৮ জন যুগ্ম সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করা হলেও আরও দুই শতাধিক কর্মকর্তা তখন বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। নিয়মিত ১৩তম ব্যাচ থেকে প্রথম দফায় যুগ্ম সচিব হওয়া সবাইকেও পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। তাদের অনেকেই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য মৌখিকভাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী, সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে দাবি জানান। কয়েকজন বঞ্চিত কর্মকর্তা রিভিউ আবেদনও করেন। তাদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে এবার শুধু বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের যোগ্যতাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না বলে বঞ্চিতদের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এবার মূলত ১৩তম ব্যাচের বাদ পড়া কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হবে। সঙ্গে যথারীতি লেফটআউট (পূর্বে বঞ্চিত) তালিকা থেকেও বেশ কয়েকজন পদোন্নতি পাবেন। পদোন্নতির এ ট্রেন ধরতে ১৫তম ব্যাচ জোরেশোরে চেষ্টা-তদবির করলেও এ যাত্রায় তাদের বিবেচনায় নেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতির তালিকা চূড়ান্ত করতে আরও দুই একটি বৈঠক হবে। কতবার বঞ্চিত হলে আর পদোন্নতি দেওয়া হবে না তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন এসএসবির (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) সদস্যরা। তিনবারের বেশি বঞ্চিতদের গতবার বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
তবে শোকের মাস হওয়ায় ১৫ আগস্টের আগে পদোন্নতি দিয়ে আনন্দ উৎসব করতে চায় না সরকার। ফলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পেতে আরও প্রায় এক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
প্রশাসন ক্যাডারের ১৩তম ব্যাচের বঞ্চিত কর্মকর্তারা জানান, পদোন্নতির যোগ্য এ ব্যাচের অনেক কর্মকর্তাকে গত বছর বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এরপর দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাদ পড়া কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জনপ্রশাসন ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে গত প্রায় এক বছরে আর পদোন্নতি হয়নি। গত কয়েক মাসে এসএসবির ৮টির বেশি বৈঠকের পরও এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ১১ ও ১২ জুলাই এ নিয়ে বৈঠক হয়।
অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতিতে ১৩তম ব্যাচের বেশিরভাগ মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তা বাদ পড়ায় বিভিন্ন অধিদপ্তর ও অনুবিভাগে দায়িত্ব প্রদানেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে সচিব পদে পদোন্নতিতেও বৈষম্য তৈরি হবে বলে সংশ্নিষ্টরা জানান।
এদিকে ১৯৮৫ ও ৮৬ এবং ৯ম, ১০ম ও ১১তম ব্যাচের বঞ্চিত কয়েকজন কর্মকর্তাও রিভিউ আবেদন করেছেন। আবেদনে প্রত্যেকে তাদের সততা, দক্ষতা, নিষ্ঠা, সৃজনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার কথা উল্লেখ করেছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির কার্যক্রম চলছে। এ নিয়ে আরও বৈঠক হবে। এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি।