কর্ণফুলীর পাড় লিজ দিয়ে শিল্প-কারখানা নির্মাণ করা যাবে না: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
 
                                                                                                স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দর থেকে মহানগরী পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর পাড় লিজ দিয়ে কোনো ধরনের শিল্প কল-কারখানা নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। 
চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনীতির প্রাণ উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান এই শহরকে নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই । 
আজ (শনিবার) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ রোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নদীর পাড়ে এসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে নদী দখল ও দূষণ বাড়বে। পরিবেশ এবং কর্ণফুলী নদীর স্বকীয়তা ও সৌন্দর্য নষ্ট হবে। যা কোনো অবস্থাতেই  করতে দেয়া হবে না। কারণ এই নদীর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থ জড়িত। কর্ণফুলী নদীর দখল ও দূষণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।
মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা শিগগিরই শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলে নগরবাসী এর সুফল পাবে। প্রকল্পে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সংশোধন করা হবে। এজন্যই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের  জলাবদ্ধতার জন্য নালা-নর্দমা ভরাট, খালে ময়লা আবর্জনা ফেলা এবং মানুষের অসচেতনতা দায়ী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যারা এ সমস্ত খাল ও জলাশয় দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন তাদেরকে সেসব সরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করেন। এছাড়া, তিনি নগরবাসীকে এ ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। 
চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা বন্ধ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে বলেন। এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় পাহাড় রক্ষার উপর তিনি জোর দেন।
সেবা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে  স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, অহেতুক কেউ কারো উপর দোষারোপ করার মাধ্যমে সরকারের অর্জন ম্লান করার অধিকার কারো নেই। তিনি সেবা সংস্থারগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। মহানগরীর সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে অনেক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে যা চলমান আছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম শহর অত্যাধুনিক শহরে রুপান্তরিত হবে। 
সভায় শহরে চলামান বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক বৃন্দ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে অবহিত করেন। এছাড়া তিনি সেবা সংস্থার প্রতিনিধিদের কথা শুনেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।
চট্টগ্রামে চলমান প্রকল্প পর্যবেক্ষণ, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অন্যান্য সমস্যা নিরুপন করে সমাধান এবং নগরীকে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন শহরে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি এবং মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করে মন্ত্রী একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত দেন। 
এই কমিটি প্রতি মাসে সভা করবে সকল সেবি সংস্থার সাথে সমন্বয় এবং চলমান প্রকল্পসমূহ ঠিকমত বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা তদারকি করবে।
বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসানের  সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এমন  ফজলুল্লাহ, সিডিএ'র চেয়ারম্যান জহিরুল আলমসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ নেন।
                                
 
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                    
                   
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            