শিরোনাম

তোপখানা রোডে শিশু গৃহকর্মীকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন, আটক তানভির আহসান ও স্ত্রী অ্যাডভোকেট নাহিদ

 প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২১, ০৫:৩২ অপরাহ্ন   |   পুলিশ


তোপখানা রোডে এক শিশু গৃহকর্মীকে অমানুষিকভাবে নির্যাতনের কথা জানতে পারে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। এ ঘটনার কথা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বিভাগ দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য দুইটি টিম সেখানে হাজির হয়।
নির্যাতিত শিশু মেয়েটির নাম সুইটি। বয়স ১২ বছর। নবাবপুর গ্রামের মিঠামইন থানার কিশোরগঞ্জ জেলায়। অভাবের তাড়নায় দরিদ্র বাবা-মা তাকে রাজধানীর তোপখানা রোডে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিতে বাধ্য হন। তোপখানার এ বাসায় সে নয় মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই তাকে নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকত্রী স্বামী-স্ত্রী উভয়েই মারধর করে। 
এক পর্যায়ে মেয়েটিকে নির্যাতনে আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন এক প্রতিবেশি। ছবিগুলো পোস্ট দেন গতকাল শনিবার ৩ জুলাই ২০২১ইং রাতে। ছবিগুলো পোস্ট দিয়ে তিনি দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থার জন্য জানান। 
ছবিতে মেয়েটির চোখের নীচে আঘাতের চিহ্ন। হাতে গুরুতর জখম এবং অপর একটি ছবিতে মেয়েটির পশ্চাৎদেশে উভয়পাশে পোড়া ঘা চোখে পড়ে। এ মর্মান্তিক নির্যাতনের দৃশ্য যে কারও বিবেককে নাড়া দিতে বাধ্য। এই পোস্টটি জিটিভির এক নারী সংবাদকর্মীর চোখে পড়লে তিনি তা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতা চান। 
ঘটনাটি কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষনিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স)মো. সোহেল রানার নির্দেশে ওসি রমনা মো. মনিরুল ইসলাম (পিপিএম) এবং ওসি শাহবাগ মওদুত হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
উভয় থানা থেকেই দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলের দিকে একটি করে টিম ছুটে যায়। পরে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং  জানতে পারে ঘটনার স্থানটি শাহবাগ থানার অধীনে। তাৎক্ষনিকভাবে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারের তৎপরতায় শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন্স মো. কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী মো. তানভির আহসান এবং স্ত্রী এডভোকেট নাহিদকে আটক করে। 
ফেইসবুকে দেওয়া পোস্টের মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যে এবং বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদেরকে আটক করা হয়। আটক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই বিষয়টি কোনো এক সচেতন নাগরিক ৯৯৯ -কে ফোন করে জানায়। পরে ৯৯৯ থেকেও থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। উল্লেখ্য, শিশুর প্রতি যে কোনো প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসন।

পুলিশ এর আরও খবর: