শিরোনাম

পিপলস লিজিংয়ের বোর্ড গঠন করে দিল হাইকোর্ট

 প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২১, ০২:২৪ অপরাহ্ন   |   বিচার বিভাগ


সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলমকে চেয়ারম্যান করে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। 
এ বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়া আরও ৯ জনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া লিখিত আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ১৩ জুলাই সাংবাদিকদের এটি নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানটির সাময়িক অবসায়ক মো. আসাদুজ্জামানের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান।
চেয়ারম্যান ছাড়া বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহীদ ফেরদৌস, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, নুর-এ-খোদা আব্দুল মবিন, মওলা মোহাম্মদ, সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ড. নাশিদ কামাল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল কবির। 
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রাখা হয় আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনকে।

এর আগে গত ২৮ জুন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে (পিএলএফএসএল) অবসায়ন না করে পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে লিখিত আদেশে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়। 
আমানতকারীদের জমানো টাকা ফেরত দিতে না পারায় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে পিপলস লিজিং বন্ধের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হয়। পরে ওই বছর ১৪ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামান খানকে অবসায়ক নিয়োগ দেন আদালত। তবে এখন পর্যন্ত কেউ জমানো টাকা ফেরত পাননি। কষ্টের জমানো টাকা ফেরত না পেয়ে অনেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রতিষ্ঠানে আমানতকারীদের জমা আছে ২ হাজার ৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এরমধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ের আমানত ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা ঋণের বড় অংশই নানা অনিয়মের মাধ্যমে বের হয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পরিদর্শনে উঠে আসে, পিপলস লিজিং থেকে বিতরণ করা ঋণের অধিকাংশই জালিয়াতির মাধ্যমে সাবেক পরিচালকরা তুলে নেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নেন দেশ থেকে পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার)। 
পিপলস লিজিংসহ চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বের করে নেন বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অবসায়ক নিয়োগের পরদিন ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই এসব ব্যক্তিসহ ১১ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ ও সম্পত্তি হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। 
পরে গত বছর ২৮ জানুয়ারি পিপলস লিজিংয়ের সাবেক ৪৬ পরিচালক ও ১৭ কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। এরই এক পর্যায়ে এ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ লাখের বেশি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া ২৮৬ জনকে তলব করে হাইকোর্ট। এর পরই হাইকোর্টে হাজির হয়ে কয়েকজন খেলাপি ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। 
অন্যদিকে হাইকোর্টের তলবে হাজির না হওয়া ১২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২৮ জুন হাইকোর্ট পিপলস লিজিং পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেয়।

বিচার বিভাগ এর আরও খবর: