পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার নাম ও স্বাক্ষর জাল করে সাড়ে ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ: দুদকের মামলা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার নাম ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া প্রকাশনার কথা বলে বিজ্ঞাপনের মূল্য বাবদ সাড়ে সাত লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পোস্টাল প্রিন্টিং প্রেসের পোস্টাল অপারেটরসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ দফতর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- উত্তরার বাসিন্দা মীর আফরোজ জামান ও পোস্টাল প্রিন্টিং প্রেসের পোস্টাল অপারেটর জীবন চন্দ্র সরকার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নাম ব্যবহার করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার নাম ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া প্যাড তৈরি করে। এর মাধ্যমে তারা ভুয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে ‘বাংলাদেশ এ্যালবাম’ নামে ভুয়া প্রকাশনার কথা বলে বিজ্ঞাপন মূল্য বাবদ বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হতে পে-অর্ডারের মাধ্যমে সাত লাখ ৬৫ হাজার ৪৮৬ টাকা আত্মসাৎ করে।
ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়েছে, আসামি মীর আফরোজ জামান বিভিন্ন সময়ে আশরাফুজ্জামান ও এম এ জামান নাম ধারণ করে ‘বাংলাদেশ এ্যালবাম’ এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর সেজে কথিত ইউএন শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন, ইউএন ডে উদযাপন উপলক্ষে ভুয়া ‘বাংলাদেশ এ্যালবাম’ এর বিজ্ঞাপনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ডিজি (ইউএন) সাদিয়া ফয়জুন্নেসার নাম ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া প্যাডে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অনুরোধ সংবলিত জাল প্রত্যয়নপত্র তৈরি করেন। পরে ‘বাংলাদেশ এ্যালবাম’ নামক ভুয়া প্রকাশনায় বিজ্ঞাপন চেয়ে ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ইফাদ অটোস লিমিটেড, জেএমআই মার্কেটিং লিমিটেড, অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (এসিআই) ও অলিম্পিক ইন্ডাসট্রিজ লিমিটেড বরাবর পত্র প্রেরণ করে।
এরপর জীবন চন্দ্র সরকার কথিত বাংলাদেশ এ্যালবামের প্রজেক্ট পরিচালক সেজে ওই সব প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১১ লাখ ১৫ হাজার ৪৮৬ টাকা বাংলাদেশ এ্যালবামের অনুকূলে পে-অর্ডার গ্রহণ করে। যা আসামি মীর আফরোজ জামানের ছেলের রুপালী ব্যাংকের উত্তরা মডেল টাউন করপোরেট শাখার ব্যাংক হিসাবে জমা দেন।
এরই মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতারণার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করা হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক তাদের সাড়ে তিন লাখ টাকার পে-অর্ডার বাতিল করলেও বাকি টাকা আসামিরা আত্মসাৎ করেন। যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১ ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ অক্টোবরের মধ্যে আসামিরা ওই টাকা আত্মসাৎ করে বলে দুদকের অনুসন্ধানের প্রমাণ পাওয়া গেছে।