শিরোনাম

‘কঠোর বিধিনিষেধের’ বিকল্প খুঁজতে হবে

 প্রকাশ: ৩১ মে ২০২১, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন   |   সম্পাদকীয়



করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লকডাউনের বিকল্প হিসেবে সরকার প্রথমবারের মতো ‘বিধিনিষেধ’ শব্দের প্রয়োগ করেছিল গত ৫ এপ্রিল। ওইদিন এক সপ্তাহের জন্য নানান বিধিনিষেধ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে তা আরও দুইদিন বাড়ানো হলেও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাই নতুন করে ১৪ এপ্রিল তারিখ থেকে শুরু হয় ‘কঠোর বিধিনিষেধ’। যদিও তারপর দফায় দফায় তার মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। হয়তো আবারও বাড়ানো হবে এর মেয়াদ।

আমাদের প্রশ্ন; কথিত এই ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ এ কতটা লাভ হলো? এতে কি আদৌ করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে? না কি তা বেড়ে গেছে- সেই মূল্যায়ন আসলে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ এর মধ্যেও বহু মানুষের মুখে মাস্ক নেই। নিজেকে এবং অন্যকে নিরাপদে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আগ্রহ খুবই কম। যার ফলে সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিধিনিষেধের প্রথম দিকে কিছুটা কমলেও এখন আবার নতুন করে করোনাভাইরাস বাড়তে শুরু করেছে।


অথচ এই আয়োজনের মূল লক্ষ্যই ছিল করোনার ভারতীয় প্রজাতির হাত থেকে বাঁচা। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, ভারতীয় প্রজাতি বাংলাদেশে ঢুকে গেছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার বেশির ভাগই হয়েছে ওই প্রজাতির সংক্রমণে। আশঙ্কা করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় সামাজিক সংক্রমণের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।

অস্বীকার করার উপায় নেই; এখন ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ খুব একটা কাজে আসছে না। তাই তো চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। রাজশাহীসহ আরও ৭ জেলা লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে আরও ১৫ দিনের জন্য।

এমন পরিস্থিতিতে ‘কঠোর বিধিনিষেধের’ কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হচ্ছে, তাতে নতুন কোন পদক্ষেপ ছাড়া করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। ভারতের করোনা পরিস্থিতি দেখে এখনো অনেকেই শিউরে উঠছেন। সেখানে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ বলতে গেলে সবকিছুই ভেঙে পড়েছে। টানা লকডাউনে ভারতে আপাতত পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে।

আমরা মনে করি, করোনার বিরুদ্ধে জয়ের একমাত্র পথ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। তাই ‘নামমাত্র কঠোর’ নয়, ‘প্রকৃত কঠোর’ পদক্ষেপ নিতে হবে।