শিরোনাম

পরিবেশের প্রয়োজনেই ছাদবাগান করা দরকার

 প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২১, ০২:১৫ অপরাহ্ন   |   সম্পাদকীয়


ছাদবাগান শুধু শখ থেকে নয়, পরিবেশের প্রয়োজনে বাগান করতে হবে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ নির্মল থাকবে অন্যদিকে পারিবারিক ফুল, ফল ও শাকসবজির চাহিদা মিটিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখারও সুযোগ রয়েছে।

শহর অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছাদবাগান প্রকল্প সম্প্রসারণ করা সম্ভব হলে তা কার্বন-ডাই-অক্সাইডসহ বেশকিছু ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা কমিয়ে দূষণ কমাবে এবং পরিবেশে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করবে।
প্রাকৃতিক অরণ্য বিনষ্ট হওয়ায় প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে মানুষের জীবন। শহরে গাছপালা কম থাকায় অক্সিজেন উৎপাদন কম এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে রাজধানীর ঢাকায় অধিক জনসংখ্যা, যানবাহন ও গাছপালা কমে যাওয়ার কারণে ঢাকার পরিবেশ দূষণ অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় অনেক বেশি। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে ছাদবাগান।
একইসঙ্গে যারা ছাদবাগান নিয়ে কাজ করছে ছোট ছোট উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে তাদেরকে ক্ষুদ্রঋণের আওতায় এনে আর্থিকভাবে সহায়তা করা। ফলে এসব কাজে উদ্যোক্তারা আরও বেশি উৎসাহী হবে জানান তিনি। আমাদের পরিবেশকে সুস্থ রাখতে ছাদবাগান অনেকে বড় ভূমিকা পালন করছে। সামনে যদি এর পরিধি আরও বাড়ানো যায় তাহলে আমাদের পরিবেশকে অনেকটা দূষণ মুক্ত রাখা সম্ভব বলে জানান আহসান রুনি।


একটা পজিটিভ বিষয় হলো এখন যেসব নতুন নতুন আবাসন তৈরি করছে সবাই সামনে পেছনে গাছ রোপণ করার জন্য আলদাভাবে জায়গা রাখছে। যারা শহরে নতুন করে বাড়ি বানানোর চিন্তা করছেন তারা অবশ্যই ছাদবাগানের বিষয়টি মাথায় রেখেই বাড়ি তৈরি করবেন বলে আশা করি। ভালো ও সুস্থ পরিবেশ ফিরে পেতে ছাদবাগানের বিকল্প নেই। শুধু তাই নয় এতে একদিকে যেমন পরিবেশ নির্মল থাকবে অন্যদিকে পারিবারিক ফুল, ফল ও শাকসবজির চাহিদা মিটিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাখারও সুযোগ রয়েছে।
রাজধানীর ফার্মগেটের তেজগাঁও স্টেশন রোডের বাসিন্দা প্রকৃতিপ্রেমী জাহাঙ্গীর আলম ইট পাথর আর কংক্রিটের শহরে একটু প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে নিজের ছাদে গড়ে তুলেছেন ছাদবাগান। কী নেই তার বাগানে, আম গাছ, জামরুল গাছ, সফেদা, মেহেন্দি গাছসহ আরও অনেক গাছ আছে তার বাগানে। অবসরে বাগানে সময় কাটানো, নিজ হাতে বাগানে পানি দেওয়াসহ সকল পরিচর্যা নিজেই করে থাকে।



বাগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাড়ি করার আগে নিচে যে ছোট ছোট গাছগুলো ছিলো আমি সেগুলো নষ্ট করিনি। তুলে এনে ছাদে মাটি দিয়ে পুনরায় রোপণ করি। দীর্ঘদিন ধরে আমি ছাদবাগান করে আসছি। যখন আমি বিকেলে ছাদের ওপরে উঠি বাগানের গাছগুলো আমার ভেতরে অন্যরকম প্রশান্তি এনে দেয়। আমার ছাদ বাগান দেখে এ এলাকার অনেকেই এখন ছাদ বাগান করছে এবং করতে উৎসাহী হচ্ছে। আমি মনে করি প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করতে প্রতিটি ছাদে বাগান করা উচিত।’




এ প্রসঙ্গে বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা  বলেন, ‘ছাদবাগান অবশ্যই পরিবেশের সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। প্রকৃতির দূষণরোধে ব্যাপকভাবে ছাদবাগান গড়ে তুলতে হবে। ইতিমধ্যে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করে হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকার ভবনগুলোতে ছাদ বাগান করলে হোল্ডিং কর থেকে ১০ শতাংশ অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে। এরকম উদ্যোগ যারা ছাদবাগান করতে চাই তাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে। এছাড়াও আমরাও প্রকল্প জিরো ওয়ের মাধ্যমে ছাদবাগানে আগ্রহীদের উৎসাহিত করছি।’



একই বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রিন সেভার্সের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রুনি  বলেন, ‘কোনভাবেই অপরিকল্পিতভাবে ছাদবাগান করা যাবে না। যারা করবেন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে করবেন, না হলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। যারা ছাদবাগান করতে চাচ্ছেন তাদের সরকারিভাবে আরও সহায়তা বাড়িয়ে দেওয়া উচিত, কারণ যত প্রচার-প্রসার হবে তত দেশে ছাদবাগান সম্প্রসারিত হবে। এজন্য সরকার প্রণোদনা দিতে পারে, অনলাইনে প্রচারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।’