স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য গণমাধ্যমকে দিতে না দেয়ার নির্দেশনায় গভীর উদ্বেগে সাংবাদিকরা
সরকারি হাসপাতালের ‘রোগীর সেবা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকাণ্ড’ সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য গণমাধ্যমকে না দেওয়ার নির্দেশনা প্রদানে গভীর উদ্বেগ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিকদের তিনটি সংগঠন। আলাদা আলাদা বিবৃতিতে এই নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় সারা দেশে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালের বিদ্যমান সক্ষমতা, স্বাস্থ্যসেবার নানা বিষয় তুলে ধরে সংকট মোকাবিলায় সরকারের নীতিনির্ধারকদের পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করছেন। অপরদিকে সাধারণ জনগণকে সচেতন ও সাবধান করে তুলতে ভূমিকা রাখছেন। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম, অপকর্ম ও ব্যর্থতা ঢাকতেই তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিক নেতারা। তারা অবিলম্বে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল মজিদ বিবৃতিতে বলেন, অবিলম্বে এই চিঠি প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি জেলা-উপজেলায় তথ্যকেন্দ্র খোলেন। যাতে সাংবাদিকরা সঠিক তথ্য পায়।
আরেক বিবৃতিতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, এ ধরনের নির্দেশনা অবাধ তথ্যপ্রবাহের নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি এবং সাংবাদিকদের কর্মপ্রবাহে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। খেয়াল রাখতে হবে, কোনোভাবেই যাতে তথ্য প্রাপ্তির অধিকার লঙ্ঘন না করা হয়। একই সঙ্গে করোনা দুর্যোগের বর্তমান ক্রান্তিকালে গণমানুষের কাছে দ্রুত সংবাদ পৌঁছাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তথ্য দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন ডিইউজে নেতারা।
অন্যদিকে ডিআরইউর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান এক বিবৃতিতে বলেন, সিভিল সার্জনের এই নির্দেশনায় ডিআরইউ নেতারা ক্ষুব্ধ এবং বিস্মিত। নেতৃবৃন্দ মনে করেন, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ঢালাওভাবে তথ্য না দেওয়ার বিষয়টি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে সাংঘর্ষিক। এ ধরনের নির্দেশনা অবাধ তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি এবং দুর্নীতিকে উত্সাহিত করবে। এটি কেবল অবাধ তথ্য প্রদানের অন্তরায় নয়, স্বাধীন সাংবাদিকতায়ও সুস্পষ্ট হস্তক্ষেপ এবং স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম ও সংকট নিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান গত ৮ জুলাই গণমাধ্যমে কোনো তথ্য না দিতে একটি নোটিশ জারি করে।