মশা নিধন ও ডেঙ্গু জ্বর রোগ প্রতিরোধে পুলিশি অভিযান-২০২১
"খাল খন্দক, ঝোপঝাড়ে, এডিস মশা ডিম পাড়ে
এডিস মশা নিধন কর, ডেঙ্গু জ্বর রোধ কর"
বাড়ির আঙ্গিনা ও আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন ডেঙ্গু জ্বর হতে মুক্ত থাকুন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অভিভাবক পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম এর নির্দেশ ও সরাসরি অংশগ্রহণে অত্র জেলার প্রত্যেকটি পুলিশ ইউনিটে একযোগে মশা নিধন ও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ পরিস্কার পরিছন্নতা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সুপার নিজে পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বাসভবন ও চুয়াডাঙ্গা থানা কম্পাউন্ড এলাকা পরিস্কার পরিছন্নতার তদারকি ও অংশগ্রহণ করেন। পুলিশ সুপার এর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ আবু তারেক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম, সহকারি পুলিশ সুপার (শিক্ষানবীশ) মোঃ সাজিদ হোসেন উপস্থিত থেকে পুলিশ লাইন্স, দামুড়হুদা মডেল থানা, আলমডাঙ্গা থানা, জীবননগর থানা ও দর্শনা থানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার তদারকি ও নেতৃত্ব প্রদান করেন। অন্যান্য পুলিশ ইউনিট সমূহের ইনচার্জগনদের কে একযোগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার নির্দেশ প্রদান করেন।
এসময় পুলিশ সুপার বলেন, 'বাংলাদেশে ১২৩ প্রজাতির মশা রয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ১৪ প্রজাতির মশা পাওয়া যায়। মশা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে মশার প্রজাতি ও আচরণভেদে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আলাদা হতে হবে। মশাকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে প্রয়োজন সমন্বিত ব্যবস্থাপনার। সমন্বিত ব্যবস্থাপনার চারটি অংশ রয়েছে। প্রথমত, মশার প্রজননস্থল কমানো এবং ধ্বংস করে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহজভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দ্বিতীয়ত, জীবজ নিয়ন্ত্রণ, অর্থাৎ উপকারী প্রাণীর মাধ্যমে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি পৃথিবীতে প্রচলিত আছে। তৃতীয়ত, মশা নিয়ন্ত্রণে লার্ভিসাইড এবং অ্যাডাল্টিসাইড কীটনাশক ব্যবহার করা। সকলের সম্পৃক্ততা ছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে সফল হওয়া দুষ্কর। তাই এ প্রক্রিয়ায় জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু হয়েছিল ২০১৯ সালে। জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর—এই চার মাস ডেঙ্গুর মৌসুম। এ সময়ে সতর্ক থাকলে ডেঙ্গু থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত একটি ভাইরাসঘটিত জ্বর রোগ। এই ভাইরাস বহন করে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির মশা। এডিস ইজিপ্টি স্বভাবগতভাবে গৃহপালিত। এই মশা ডেঙ্গু বিস্তারে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভূমিকা রাখে। আর এডিস এলবোপিকটাস, যাকে ‘এশিয়ান টাইগার’ মশা বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামেই এ মশা রয়েছে। এই প্রজাতি ডেঙ্গু বিস্তারে ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভূমিকা রাখে।
পুলিশ সুপার আরোও বলেন, এডিস মশার জন্ম হয় জমে থাকা পানিতে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন বাড়ি এবং বাড়ির চারদিক দেখতে হবে। কোথাও কোনো পাত্রে পানি জমে আছে কি না, যদি থাকে, তাহলে তা ফেলে দিতে হবে বা পরিষ্কার করতে হবে। যদি পাত্রটি এমন হয় যে পানি ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না, তাহলে সেখানে ব্লিচিং পাউডার বা লবণ দিতে হবে। বাড়ির পাশে কোনো নির্মাণাধীন ভবন থাকলে, সেটির মালিককে সামাজিকভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন বাড়িতে মশা জন্মানোর স্থান তৈরি না করেন। পরিশেষে, পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশবাসিকে মশা নিধন ও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে নিজ উদ্যোগে আবাসিক এলাকাসমূহ পরিস্কার পরিছন্নতার আহব্বান জানান।