শিরোনাম

চাঞ্চল্যকর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার

 প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২১, ১০:৪৭ অপরাহ্ন   |   পিবিআই


এইচ. এম জোবায়ের হোসাইন (ময়মনসিংহ):

ময়মনসিংহ শহরের গোহাইলকান্দি তিন কোণা পুকুর পাড় এলাকায় প্রায় এক বছর আগে খুন হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম খান (২৫) হত্যা মামলার দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ময়মনসিংহ।

মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সন্ধিগ্ধ আসামী ১। রিফাত (২৩), পিতা-হারুন অর রশীদ, মাতা-মোছাঃ রেনু বেগম, সাং-জামতলা পোড়াবাড়ী, থানা-কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ’কে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালী থানাধীন জামতলা পোড়াবাড়ী সাকিনস্থ নিজ বাড়ীর সামনে হতে এবং ২। মোঃ মহসিন মিয়া (২৫), পিতা-মৃত আঃ রাজ্জাক, সাং-আউটার স্টোডিয়াম, থানা-কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ’কে একই দিন রাতে কোতোয়ালী থানাধীন আউটার স্টোডিয়াম সংলগ্ন নিজ বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ত্রিশাল কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম খান (২৫) ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানাধীন গোহাইলকান্দি তিনকোণা পুকুর পাড় এলাকায় মেসে ভাড়া থাকাবস্থায় গত বছরের  ১ মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা আসামীরা তার রুমে ঢোকে বুকে ঘাই মেরে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে এবং বাম হাতের বাহুতে ঘাই মেরে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে আহত করে। পরবর্তীতে বাসার মালিক উক্ত বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদ’কে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই দিন ভোররাত অনুমান ৫টার দিকে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদ মারা যায়। ওই ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা নং-২, তাং-০১/০৫/২০২০ রুজু করা হয়।

কোতোয়ালী থানা পুলিশ মামলাটি ২ মাস তদন্ত করে তদন্তে প্রাপ্ত ১জন আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে মামলাটির অধিকতর তদন্তভার পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার উপর ন্যস্ত হয়।
পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিপিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ দেলোয়ার হোসাইন মামলাটি তদন্ত করেন।

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী রিফাত রং মিস্ত্রির কাজ করে। আসামী রিফাত, আশিক, মহসিন ও অন্তর একসাথে চলাফেরা করত। গত ০১/০৫/২০২০ খ্রিঃ রাত ২/৩ টায় তারা মহসিনের বাসায় ইয়াবা সেবন করে। আশিক তাদের ইয়াবা খাওয়া শেখায়। ইয়াবা খাওয়া শেষ হলে আশিক বলে চল একটা মোবাইল চুরি করে নিয়ে আসি। তখন মহসিনের বাসা হতে অন্তর তার বাসায় চলে যায়। আসামী রিফাত, আশিক ও মহসিন তিনকোনা পুকুর পাড় এলাকার সোলায়মানের বাসায় যায়। ঐ বাসার নিচ তলার মেসের রুমে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদ থাকত এবং আশিক তাকে পূর্ব থেকে চিনত। আসামী ৩ জন ছাদ দিয়ে টপকে মেসে তৌহিদের রুমে যায়। তখন তৌহিদ সেহরী খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং তৌহিদের স্মার্ট ফোনটি জানালার পাশে টেবিলের উপর রাখা ছিল। প্রথমে মহসিন জানালা দিয়ে মোবাইলটি নিতে গেলে তৌহিদ দেখে ফেলে। পরে তৌহিদ দরজা খুলে বাহিরে আসলে আসামী আশিক তাকে জাপটে ধরে। আসামী রিফাত হাত ধরে। আসামী মহসিন দেড়হাত লম্বা লোহার রড দিয়ে তৌহিদের বুকে ঘাই মারে। তখন আসামী আশিকও তৌহিদকে মেরে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর তৌহিদ ডাক চিৎকার শুরু করলে আসামীরা পালিয়ে মহসিনের বাসায় যেয়ে ঘুমিয়ে পরে।

এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহের এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদ হত্যা মামলা। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলার অধিকতর তদন্তভার পিবিআই ময়মনসিংহ জেলাকে প্রদান করা হলে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। তদন্তের এক পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্যর ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামী ১। রিফাত (২৩) কে কোতোয়ালী থানাধীন জামতলা পোড়াবাড়ী সাকিনস্থ নিজ বাড়ীর সামনে হতে এবং আসামী ২। মোঃ মহসিন মিয়া (২৫) কে কোতোয়ালী থানাধীন আউটার স্টোডিয়াম সংলগ্ন নিজ বাসা হতে গত ০৯/০৭/২০২১ খ্রিঃ সন্ধ্যায়  গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের শনিবার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পিবিআই এর আরও খবর: