নবম দিনের লকডাউনে ঢিলেঢালা ভাব: মানুষ ছিল বাইরে

আসাদুজ্জামান (সাতক্ষীরা):
করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে মানুষকে ঘরে রাখতে নিয়মিত পুলিশের কার্যক্রম সরেজমিনে তদারকি করছেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান (পিপিএম বার)। সোমবার সকালে লকডাউন বাস্তবায়নে তিনি পুলিশ সদস্যদের নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সাধারণ মানুষকে ঘরে ফেরাতে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালান। করোনা সচেতনতায় তিনি মানুষকে ঘরের বাইরে না আসার আহ্বান জানান। একই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান। জনসাধারণকে জনসমাগম না করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক মুখে পরিধান করা ও প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহবান জানান পুলিশ সুপার।
এদিকে সাতক্ষীরায় দ্বিতীয় দফার সাত দিনের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টির কারণে লকডাউন খানিকটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। তবে পুলিশ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড বসিয়ে বিনা কারণে চলাচলরত মানুষ ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোববার সাতক্ষীরা জেলায় আরোপিত বিধি-নিষেধ প্রতিপালনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৫১টি মামলায় ১লাখ ৩৯হাজার ৯০০টাকা জরিমান আদায় করা হয়।
জেলায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে করোনার লাগাম টানতে প্রশাসনকে গত কয়েকদিন কঠোর হতে দেখা গেলেও রবিবার কিছুটা ঢিলেঢালা দেখা গেছে। তবে মোড়ে মোড়ে চলছে তল্লাশী। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশি চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে, হাট বাজারগুলোতে ভিড় লক্ষণীয়। তারা যেন কিছুতেই স্বাস্থ্য বিধি মানতে চাচ্ছেন না। এছাড়া লকডাউনের মধ্যে দোকানপাট খোলা রাখা, স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ বিভিন্ন অপরাধে জেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো: সজীব খান বলেন, জেলায় করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ঘোষিত ডকডাউন বাস্তবায়নে জেলা পুলিশ সর্বাতক চেষ্টা করে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড বসিয়ে বিনা কারণে চলাচলরত মানুষ ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অযথা ঘোরাঘুরি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঢাকা, খুলনা ও যশোর থেকে সাতক্ষীরামুখি সকল প্রবেশ পথ। তবে জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের কাজে কিছুটা বাধা গ্রস্থ হয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা, সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকা ও স্বাস্থাবিধি মেনে চলা, জনসমাগম না করা, মুখে মাস্ক পরিধান করা ও প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে বের না হওবার জন্য জনসাধারণকে আহবান জানান। জনসচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা ও মটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরার করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় গত ৫ জুন থেকে প্রথম দফায় ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১২ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় আরও ৭ দিন বাড়ানো হয় লকডাউন চলবে আগামী ১৮ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত জেলাব্যপি এই লকডাউন বলবৎ থাকবে। দ্বিতীয় মেয়াদের লকডাউনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী কেনাকাটার সময় এক ঘন্টা এগিয়ে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত করা হয়েছে।