৮ দিনের ‘লকডাউনে’ মোংলা : বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে
গত দুই দিনে মোংলায় ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোংলা এলাকায় সম্প্রতি যে হারে এ ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে তাতে লকডাউনের বিকল্প নেই।করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই একমাত্র উপায়।
গত দুই দিনে উদ্বেগজনক হারে করোনাভাইরাসের শনাক্ত হওয়ায় আগামী আটদিনের জন্য মোংলা উপজেলাজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।লকডাউনে মধ্যে কাঁচা ও মাছ বাজার ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখতে বলা হয়েছে; অন্যসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবা ওষুধের দোকান ও রোগী পরিবহণের অ্যাম্বুলেন্স ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
এই লকডাউনের মধ্যে পৌরসভার মানুষ পৌরসভার বাইরে যেতে পারবে না আর গ্রামের মানুষ পৌরসভায় ঢুকতে পারবে না। অতিপ্রয়োজনে যদি কেউ ঘর থেকে বের হয় তাহলে তাকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে কেউ অনীহা দেখালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মোংলায় একাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠে রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
বাগেরহাটের মোংলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনকহারে বাড়তে থাকায় আটদিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।
মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার জানান, রোববার ভোর থেকে এ লকডাউন শুরু হয়েছে।
সাধারণ মানুষ যাতে এই লকডাউন মেনে চলে সেজন্য প্রশাসন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। অতিপ্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণকে ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
তবে লকডাউনের মধ্যে কাঁচা ও মাছ বাজার ভোর ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখতে বলা হয়েছে। জরুরি সেবা ওষুধের দোকান ও রোগী পরিবহণের অ্যাম্বুলেন্স ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
তাহের বলেন, লকডাউনের কারণে রোববার সকাল থেকে শহরের মাছ ও কাঁচা বাজার বাদে সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে টহল দিচ্ছে। এ আটদিন অতিপ্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানান এই জনপ্রতিনিধি।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২০ এপ্রিল মোংলায় অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা হয়। সেই থেকে সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে।
“তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ ও ২৯ মে পরপর দুই দিনে ৬২টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়। যার শতকরা হার ৭৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। যা স্বাস্থ্যবিভাগ উদ্বেগজনক বলে মনে করছে।”
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা যেহেতু অপ্রতুল তাই স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনই একমাত্র পথ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম বন্ধ না করলে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। তাই জনসমাগম বন্ধের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনকে পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে লকডাউনে মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান।
মোংলা বন্দরে বর্তমানে চাল, সার, ক্লিংকার, পাথর ও এলপিজি গ্যাসসহ দেশিবিদেশি ১০ টি জাহাজ অবস্থান করছে। রোববার সকাল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে পণ্য ওঠানামার কাজ চলছে। জাহাজের শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করছে।
ফকর উদ্দিন বলেন, “বাইরে থেকে আসা জাহাজের সবাইকে জাহাজ থেকে নিচে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। তাদের কিছু প্রয়োজন হলে আমদানিকারকরা জাহাজে সরবরাহ করবে।”